The Indian Chronicles | কলকাতা | আগস্ট ২০২৫
তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে শুরু হল এক নতুন অধ্যায়—পালাবদলের স্পষ্ট বার্তা দিয়ে লোকসভার দলনেতা পদে বদল আনলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রবীণ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জায়গায় এবার লোকসভার দলনেতার দায়িত্ব পেলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত কয়েক মাস ধরে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় গুরুতর অসুস্থতায় ভুগছেন। বাদল অধিবেশনের শুরু থেকে তাঁকে সংসদে দেখা যায়নি এক দিনও। এমন অবস্থায় দলের কার্যকরী নেতৃত্বে পরিবর্তন যে অনিবার্য ছিল, তা কার্যত স্বীকার করে নিলেন তৃণমূল নেত্রী নিজেই। সোমবার সাংসদদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকে সেই সিদ্ধান্ত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন মমতা।
‘নবীন’-এর হাতে ‘প্রবীণ’-এর ব্যাটন

দলের একাংশে ইতিমধ্যেই ‘প্রবীণ বনাম নবীন’ বিতর্ক চলছিল। প্রবীণদের মধ্যে যেমন রয়েছেন সৌগত রায়, তেমনি গুরুতর অসুস্থতার কারণে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছিল। এই পরিস্থিতিতে লোকসভার নেতৃত্বের ভার তুলে দেওয়া হল অভিষেকের কাঁধে। বয়স ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের কথা মাথায় রেখে তৃণমূলের এই সিদ্ধান্তকে ‘কৌশলগত পরিবর্তন’ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বৈঠকে কী বললেন মমতা ও সুদীপ?
সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমেই সুদীপের খোঁজ নেন। সুদীপ জানান, তিনি বৈঠকে রয়েছেন এবং তাঁর শরীর আগের চেয়ে ভালো। তবু মমতা বলেন, “তোমার বিশ্রাম দরকার। লোকসভার দিকটা এখন থেকে অভিষেক দেখবে।” সুদীপ জানান, তিনি চাইলে পরদিনই দিল্লি যেতে পারেন, কিন্তু নেত্রী বলেন, “তার প্রয়োজন নেই।”

অভিষেকের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ
লোকসভার দলনেতা হিসেবে এখন থেকে তৃণমূলের পক্ষে কে কখন, কী বিষয়ে কথা বলবেন, তা ঠিক করার দায়িত্ব অভিষেকের। সেই তালিকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। অর্থাৎ দলের সাংসদদের কার্যকলাপে এখন থেকে অভিষেকের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত।

পালাবদলের ইঙ্গিত আরও স্পষ্ট?
দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র ব্যক্তিগত নয়—এ এক সময়োচিত নীতিগত অবস্থানও। প্রবীণদের সম্মান রেখেই নবীনদের দায়িত্ব বাড়িয়ে, তৃণমূল কংগ্রেস ভবিষ্যতের রূপরেখা তৈরি করতে চাইছে বলেই অনেকের অভিমত। এখন দেখার, এই পালাবদলের ঢেউ আরও কত দূর ছড়ায়—বিশেষত রাজ্য রাজনীতির পটভূমিতে।