শনিবার সকাল থেকেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দুপুরে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ হওয়ার কথা থাকলেও, তার আগেই সেই তালিকা ফাঁস হয়ে যায়। সূত্রের দাবি, তালিকায় রয়েছে তৃণমূল নেতা, অঞ্চল সভাপতি, এমনকি এক বিধায়কের মেয়ের নামও। পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের ছেলের নামও নাকি ওই তালিকায় রয়েছে। ফলে নতুন করে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ ঘিরে তীব্র হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনের লড়াই।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে অযোগ্য প্রার্থীর সংখ্যা ৯৯৩ জন এবং একাদশ-দ্বাদশে ৮১০ জন। এর মধ্যে প্রায় ৮০৮ জন ওএমআর শিট জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরি পেয়েছিলেন। আবার অনেকেই rank জাম্প করে চাকরি পেয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রায় ১,৯০০ জনের নাম রয়েছে অযোগ্য তালিকায়।
এই ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তাঁর বক্তব্য— “এ হল স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির চরম উদাহরণ। প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি, সরকার অনেক নাম চেপে যাচ্ছে।”
অন্যদিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করে বলেন, “বাংলার যুব সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে যারা খেলছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। এবার বাংলা বিচার চাইছে।”
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অযোগ্য প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করতে হবে এবং ভবিষ্যতের পরীক্ষায় তাঁদের অংশগ্রহণ বন্ধ করতে হবে। আগামী ৭ ও ১৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা। বিচারপতিরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, এই পরীক্ষায় কোনো অযোগ্য প্রার্থী যেন অংশগ্রহণ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
যোগ্য অথচ দীর্ঘদিন চাকরিহারা প্রার্থীরা আলাদা পরীক্ষা নেওয়ার দাবি তুললেও আদালত সেই আবেদন খারিজ করেছে। বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বয়সে ছাড় ও অভিজ্ঞতার সুবিধা থাকায় তাঁদের একই পরীক্ষায় বসতেই হবে।
এই ঘটনার জেরে শিক্ষাক্ষেত্রের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। অযোগ্যদের তালিকা আগাম ফাঁস হয়ে যাওয়ায় উত্তাল হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। এখন নজর সবাই রেখেছে—এই কেলেঙ্কারির পর ভবিষ্যতে রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া কোন পথে এগোয়।