সম্প্রতি ধনুশের ২০১৩ সালের ব্লকবাস্টার সিনেমা ‘রাঞ্জনা’-কে নতুনভাবে রি-রিলিজ করা হয়েছে একটি পরিবর্তিত ক্লাইম্যাক্স নিয়ে, যেটি সম্পূর্ণরূপে এআই (AI)-র মাধ্যমে সংশোধন করা হয়েছে। তবে এই পরিবর্তন অভিনেতা ধনুশের মন জয় করতে পারেনি। তিনি প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানিয়েছেন এই সংস্করণের বিরুদ্ধে, বলেছেন—“এটি সিনেমার আত্মাকেই কেড়ে নিয়েছে।”
রি-রিলিজে AI ক্লাইম্যাক্স: ধনুশের চোখে “আত্মাহীন”
নতুন প্রজন্মকে রাঞ্জনা’র ভালোবাসার গল্পের সাথে পরিচিত করানোর জন্য সিনেমাটি রি-রিলিজ করা হয়। তবে এবার শেষ দৃশ্যকে এআই-এর সাহায্যে পরিবর্তন করা হয়েছে যাতে গল্পের পরিণতি আরও “ইতিবাচক” হয়। মূল সিনেমায় যেখানে ট্র্যাজেডি ছিল, সেখানে এআই সংস্করণে সুখী সমাপ্তি দেখানো হয়েছে।
ধনুশ এক বিবৃতিতে বলেন, “এই সিনেমা আমার হৃদয়ের খুব কাছের। আমি জানি এর যেই ক্লাইম্যাক্স দর্শকদের কাঁদিয়েছিল, সেটাই এর আত্মা। নতুন সংস্করণে সেই আত্মা নেই।”

সিনেমার মৌলিকতা বনাম প্রযুক্তির আধিপত্য
এআই এখন সিনেমা, গান, সাহিত্যসহ প্রায় সব ক্ষেত্রেই প্রবেশ করেছে। এই প্রযুক্তি দ্রুত কাজ করতে সাহায্য করে এবং অনেক নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। কিন্তু, ধনুশের মতে, সৃজনশীলতার জায়গায় প্রযুক্তির এমন হস্তক্ষেপ চলচ্চিত্রের মৌলিকতা নষ্ট করে দিতে পারে।
ধনুশ আরও বলেন, “সিনেমা হচ্ছে একটি শিল্প। এটি শুধুমাত্র একটি গল্প নয়, এটি আবেগ, হৃদয় আর প্রতিক্রিয়া দিয়ে গঠিত। আমরা যদি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে এই আবেগের পরিবর্তন ঘটাই, তাহলে সেই শিল্প আর শিল্প থাকে না।”
এই বক্তব্যের পর অনেক ফিল্ম নির্মাতা এবং সমালোচকরাও ধনুশের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং এই AI-সংস্করণকে “বাণিজ্যিক চমক” বলে অভিহিত করেছেন।
ভক্তদের প্রতিক্রিয়া: আবেগ বনাম আপডেট
‘রাঞ্জনা’র AI সংস্করণ মুক্তির পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্তদের প্রতিক্রিয়া মিশ্র। কেউ কেউ এই “সুখী সমাপ্তি”কে স্বাগত জানিয়েছেন, কিন্তু অধিকাংশই ধনুশের সাথে একমত।
একজন ফ্যান টুইটারে লেখেন, “আমি যখন প্রথম রাঞ্জনা দেখেছিলাম, শেষ দৃশ্যটা আমার চোখে জল এনেছিল। এই নতুন সংস্করণ দেখে মনে হচ্ছে, কেউ আমার সেই স্মৃতিটাই কেড়ে নিলো।”
অন্যদিকে, কিছু প্রজন্মের তরুণ দর্শক নতুন ক্লাইম্যাক্সকে পছন্দ করেছেন, যেহেতু এটি একটি “ইনস্পায়ারিং এন্ডিং” দেয়।
উপসংহার: সিনেমার আত্মা কি AI দিয়ে বদলানো যায়?
ধনুশের এই বিবৃতি আমাদের নতুন এক বিতর্কের সামনে দাঁড় করিয়েছে—প্রযুক্তি কি শিল্পের প্রাকৃতিক আবেগকে প্রতিস্থাপন করতে পারে? সিনেমার মতো একটি আবেগপ্রবণ শিল্পমাধ্যমে AI-এর ভূমিকা কি শুধুই টুল হিসেবে থাকা উচিত, নাকি এটি গল্পের গঠন পর্যন্ত পৌঁছাবে?
‘রাঞ্জনা’র এই এআই ক্লাইম্যাক্স বিতর্ক শুধু একটি সিনেমার ভবিষ্যত নির্ধারণ করছে না, বরং সমগ্র চলচ্চিত্র জগতকে এক বড় প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
📢 আপনার মতামত দিন! আপনি কি AI সংস্করণকে সমর্থন করেন, নাকি ধনুশের মতই মনে করেন যে এটি সিনেমার আত্মা নষ্ট করেছে? কমেন্টে জানান ও বন্ধুদের সাথে এই প্রতিবেদনটি শেয়ার করুন।