The Indian Chronicles | ঝাড়গ্রাম, আগস্ট ২০২৫
অরণ্য ছায়াঘেরা শান্ত শহর ঝাড়গ্রাম। আর সেই শান্ত শহরের বুকেই এবার গর্জে উঠবে ভাষার সম্মান রক্ষার আওয়াজ। বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় এবার ঝাড়গ্রাম থেকেই প্রতিরোধের বার্তা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৬ অগস্ট তিনি পৌঁছচ্ছেন ঝাড়গ্রামে। আর তার পরদিন, ৭ অগস্ট থেকে ঘোড়াধরা স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে বিশ্ব জনজাতি দিবসের সাংস্কৃতিক মহোৎসব।
তৃণমূল সূত্রের খবর অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী শুধু প্রশাসনিক বৈঠকেই নয়, জনজাতি সমাজের বেশ কিছু প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলাদা বৈঠক করতে পারেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই আলোচনা জনজাতি রাজনীতিতে এক নতুন মোড় আনতে চলেছে।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মু বলেন, “বাংলা ভাষার উপর বহিরাগত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এবার ঝাড়গ্রাম থেকেই প্রতিরোধ শুরু হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে পদযাত্রায় অংশ নেবেন দলের সর্বস্তরের নেতা ও কর্মীরা।”
সঙ্গে থাকছে চারদিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ঘোড়াধরা স্টেডিয়ামে মঞ্চস্থ হবে সাঁওতালি, মুন্ডা, কুড়মি সমাজের লোকনৃত্য, গান, পোশাক ও ঐতিহ্যের প্রদর্শনী। রাজ্য সরকার ও তৃণমূল নেতৃত্বের যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠান ঘিরে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি তুঙ্গে।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তায় কোনও রকম খামতি রাখতে নারাজ প্রশাসন। জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা জানিয়েছেন, “সীমান্তবর্তী ঝাড়খণ্ডের মাওবাদী-অন্তর্ভুক্ত অঞ্চলগুলিতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। গোটা জেলা জুড়ে চলছে চেকিং ও টহল।”
জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল জানিয়েছেন, “৬ অগস্ট মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়গ্রামে পৌঁছাবেন। ৭ তারিখ ঘোড়াধরা স্টেডিয়ামে বিশ্ব জনজাতি দিবসের সূচনা করবেন। একইসঙ্গে বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মসূচিতেও অংশ নেবেন তিনি।”
জনজাতি সমাজের ভাষা ও সংস্কৃতির যে স্বীকৃতি রাজ্য সরকার দিচ্ছে, তা নিঃসন্দেহে বাংলার গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতিফলন। আর সেই চেতনার প্রতীক হয়ে উঠছে অরণ্য শহর ঝাড়গ্রাম — যেখানে ভাষা, সংস্কৃতি আর অধিকার মিলছে এক অভিন্ন উৎসবে।