জম্মু ও কাশ্মীরে টানা বৃষ্টিপাতের ফলে ভয়াবহ ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৈষ্ণো দেবী যাত্রাপথে একটি বড় ভূমিধসে অন্তত ১৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। মৃতদের মধ্যে ৯ জন বৈষ্ণো দেবীর তীর্থযাত্রী। এই দুর্ঘটনা স্থানীয় প্রশাসন ও উদ্ধারকারী বাহিনীকে বিপাকে ফেলেছে, কারণ এখনও কিছু এলাকায় প্রবল বৃষ্টি চলছে।
বৈষ্ণো দেবী পথে ভূমিধস: কীভাবে ঘটল দুর্ঘটনা?
টানা মুষলধারে বৃষ্টির ফলে কাটা পাহাড়ের মাটি সরে এসে যাত্রাপথে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। এরই মাঝে তীর্থযাত্রীদের ভিড় থাকায় বড় দুর্ঘটনা ঘটে। জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই উত্তর ভারত থেকে আসা যাত্রী।

সরকারি এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃষ্টির কারণে পাহাড়ি এলাকায় আরও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যেই জম্মু-শ্রীনগর হাইওয়ের বেশ কয়েকটি অংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
উদ্ধারকাজ ও প্রশাসনের পদক্ষেপ
উদ্ধারকারী দল ও এনডিআরএফ কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের উপ-মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। পাশাপাশি, তীর্থযাত্রীদের জন্য বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে মাটির স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়ে গিয়েছে, যা পাহাড়ি এলাকায় বড় বিপদ ডেকে আনছে।
নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
প্রশ্ন উঠছে, তীর্থযাত্রীদের জন্য এত বড় বিপজ্জনক যাত্রাপথ খোলা রাখা উচিত ছিল কিনা। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এই সময় পাহাড়ি এলাকায় ভ্রমণ ও যাত্রা সীমিত করা প্রয়োজন। প্রশাসনও ভবিষ্যতে বৈষ্ণো দেবী যাত্রায় আরও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার আশ্বাস দিয়েছে।
এছাড়া আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী কয়েকদিন জম্মু ও কাশ্মীরে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। ফলে পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের অতি সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
উপসংহার
জম্মু ও কাশ্মীরের ভূমিধস আবারও দেখিয়ে দিল পাহাড়ি এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ কতটা বিপজ্জনক হতে পারে। বৈষ্ণো দেবীর পথে প্রাণ হারানো ১৩ জনের পরিবারকে গভীর সমবেদনা জানানো হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে প্রশাসনের আরও সতর্ক ও প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।