জন্মাষ্টমীর আগে গোটা দেশজুড়ে যখন ভক্তিময় আবহ, তখন পশ্চিমবঙ্গের দিঘায় যেন দেখা মিলল এক অনন্য আকাশলীলার। জগন্নাথ মন্দিরের গম্বুজের উপর ভাসছিল এক বিরল দৃশ্য—বৃত্তাকার রামধনু। ভোরের মৃদু রোদ আর সমুদ্রের নোনা হাওয়ার মধ্যে সেই বর্ণমালা যেন এক স্বর্গীয় মুকুটের মতো ঘিরে ধরেছিল মন্দিরটিকে।
এই দৃশ্য শুধু সাধারণ দর্শনার্থীদের নয়, প্রশাসনকেও মুগ্ধ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন সেই ছবি। ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন— “দিঘার জগন্নাথধামে প্রভু শ্রীকৃষ্ণের আগমনের বার্তা নিয়ে এলো রামধনুর আলোকবৃত্ত।” তাঁর এই পোস্ট মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়, হাজার হাজার মানুষ শুভেচ্ছা ও ভক্তির বার্তা জানান।

বিজ্ঞান বলছে, এই ধরনের বৃত্তাকার রামধনু বা ‘হ্যালো’ মূলত সূর্যের চারপাশে বরফ কণার প্রতিফলনের ফলে তৈরি হয়। কিন্তু ভক্তজনদের কাছে এর অর্থ শুধুই আধ্যাত্মিক—প্রভুর আবির্ভাবের আভাস। বিশেষ করে জন্মাষ্টমীর প্রাক্কালে এই দৃশ্যকে তাঁরা অলৌকিক আশীর্বাদ হিসেবেই দেখছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এমন দৃশ্য দিঘায় সচরাচর দেখা যায় না। পর্যটকরাও উচ্ছ্বসিত—একদিকে সমুদ্রের ঢেউ, অন্যদিকে মন্দিরের মাথায় আকাশজুড়ে রঙের বৃত্ত, যেন স্বর্গ ও মর্ত্যের মিলনমঞ্চ। মন্দির প্রাঙ্গণে তখন ভক্তরা ভজন গাইছেন, কেউ কেউ হাতে তুলসিমালা নিয়ে প্রার্থনায় নিমগ্ন, আবার কেউ মোবাইলে সেই মুহূর্ত বন্দি করছেন।
জন্মাষ্টমীর প্রাক্কালে এই আকাশী আশীর্বাদ দিঘার জগন্নাথধামকে যেন আরও পবিত্র করে তুলল। ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে একটাই কথা—“প্রভু এসেছেন, আমাদের দেখাতে তাঁর মহিমা।” আর সমুদ্রতটের শহর দিঘা এখন শুধু পর্যটনের নয়, ভক্তিরও তীর্থক্ষেত্র হয়ে উঠেছে।