টানা বর্ষণে জলের নিচে কঙ্কালীতলা সতীপীঠ। আর সেই মন্দির প্রাঙ্গণের হাঁটু জল পেরিয়ে জীবনের নতুন পথচলা শুরু করলেন বীরভূমের প্রেমিক যুগল প্রিয়তোষ রায় ও শ্রাবণী সরকার। শ্রাবণের পবিত্র আবহে মহাদেবের আশীর্বাদ নিয়ে ‘ভেজা’ সাত পাকের এই প্রেমঘন বিয়ে এখন রীতিমতো ভাইরাল।

বীরভূম জেলার ইলামবাজারের বাসিন্দা প্রিয়তোষ ও শ্রাবণী দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ। শ্রাবণ মাসেই বিয়ে করার পরিকল্পনা ছিল বহুদিনের। তাই কঙ্কালীতলা সতীপীঠে শুভ পরিণয়ের দিন ঠিক করেন তাঁরা। কিন্তু প্রকৃতি তখন রূদ্ররূপে। কোপাই নদীর জলস্তর বেড়ে পুরো মন্দির চত্বর হাঁটু জলমগ্ন।
তবুও পরিকল্পনায় ছেদ পড়েনি। ধর্মীয় আবহ, আস্থা ও ভালোবাসা নিয়েই জলে নামেন বর-কনে। ধুতি তুলে, শাড়ি সামলে, আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে কঙ্কালীতলার জলে দাঁড়িয়ে তাঁরা সারেন সাত পাক, মালাবদল ও শুভদৃষ্টি।
নববধূ শ্রাবণীর মতে, “জল আমাদের আটকে রাখতে পারেনি। এটা আমাদের ভালোবাসার উৎসব। মহাদেবের আশীর্বাদে এই দিনটা আমাদের জীবনের সবচেয়ে বিশেষ মুহূর্ত হয়ে থাকল।”

স্থানীয়দের অনেকেই এই দৃশ্য দেখে আবেগাপ্লুত। কেউ বলছেন, “ভালোবাসার এমন দৃশ্য আগে কখনও দেখিনি। প্রকৃতিকে জয় করে প্রেম সত্যি হল।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান সময়ে যেখানে সামাজিক বাধা, আর্থিক চাপ বা আবহাওয়ার কারণে বহু বিবাহ পিছিয়ে যাচ্ছে, সেখানে এই যুগলের পদক্ষেপ এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
এতসব চ্যালেঞ্জের পরও শুধু ভরসা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার ওপর ভিত্তি করেই এই বিয়ে হয়েছে—এটাই নেটিজেনদের চোখে এক নতুন গল্পের জন্ম!