The Indian Chronicles | রচনা ধর্মী নিউজ রিপোর্ট | ৪ অগস্ট ২০২৫
তৃণমূল কংগ্রেসে বড়সড় সাংগঠনিক রদবদল এবং সেই রদবদলের আঁচেই যেন এক নতুন রাজনৈতিক বিস্ফোরণ। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা হিসেবে নাম ঘোষণার পরই চিফ হুইপের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে ব্যক্তিগত ক্ষোভ না কৌশল?
সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সাংসদদের বৈঠকে অভিষেককে লোকসভায় দলের নতুন দলনেতা হিসেবে ঘোষণা করতেই, শ্রীরামপুরের বর্ষীয়ান সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তৎক্ষণাৎ পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। যদিও সেই পদত্যাগ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়নি। আপাতত সমন্বয়ের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন কাকলী ঘোষ দস্তিদার।

অভিষেকের ফোন, অনুরোধ ৭ অগস্টে বৈঠকের
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে কল্যাণকে অনুরোধ করেন ৭ অগস্ট তাঁর সঙ্গে আলোচনার পরেই যেন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ইস্তফাপত্র পাঠানোর বিষয়টি যেন কিছুটা অনমনীয় মনোভাবের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘বিস্ফোরণ’: মহুয়াকে তীব্র আক্রমণ
I have taken note of the recent personal remarks made by Ms. Mahua Moitra in a public podcast. Her choice of words, including the use of dehumanising language such as comparing a fellow MP to a "pig", is not only unfortunate but reflects a deep disregard for basic norms of civil…
— Kalyan Banerjee (@KBanerjee_AITC) August 4, 2025
এই সাংগঠনিক টানাপোড়েনের মধ্যেই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এক্সে (X) একটি বিস্ফোরক পোস্টে নাম না করে মহুয়া মৈত্রর কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন,
“আমি মহুয়া মৈত্রর সাম্প্রতিক মন্তব্যগুলো লক্ষ্য করেছি। এক পাবলিক পডকাস্টে তিনি তাঁর সহ-সাংসদকে ‘শুয়োর’ বলেন। এ ধরনের অবমাননাকর ভাষা গণতান্ত্রিক বাক্সংস্কৃতির প্রতি অবজ্ঞা ছাড়া কিছু নয়।”
সেই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন—
“যদি এ কথা কোনও পুরুষ কোনও মহিলাকে বলতেন, তাহলে দেশজুড়ে প্রতিবাদ হত। পুরুষকে অপমান করলে বাহবা দেওয়া হয়, এটাই দ্বিচারিতা।”
কল্যাণের মন্তব্যে রাজনৈতিক সৌজন্য ও লিঙ্গভিত্তিক ব্যবহারের দ্বিমুখীতার প্রশ্ন উঠে আসে, যা দলের অভ্যন্তরীণ পরিবেশে বিদ্যমান অসন্তোষকেই তুলে ধরে।
মমতার বার্তা: “দ্বন্দ্ব দলের ঊর্ধ্বে নয়”
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে বলেন,
“দুই সাংসদের দ্বন্দ্ব কখনওই দলের থেকে বড় হতে পারে না।”
তিনি কোনও নাম না নিলেও সবাই বুঝে নিয়েছেন যে এই মন্তব্য মূলত কল্যাণ-মহুয়া দ্বন্দ্বকে উদ্দেশ্য করেই।
এই ঘটনার তাৎপর্য শুধুই সাংগঠনিক রদবদলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়—এ এক বড়সড় বার্তা। তৃণমূল কংগ্রেস অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে ভবিষ্যতের নেতৃত্বকে মজবুত করতে চাইছে, এবং সেই পথে এক এক করে পুরনো ঘরানার নেতৃত্ব হয় সরে দাঁড়াচ্ছেন, নয়তো সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।