ভারতের সেনাবাহিনীর প্রধান Upendra Dwivedi সম্প্রতি এক ভাষণ দিয়েছিলেন যে আজ‑কালকের হয়ে দেখা যায় না আগামীকাল ঠিক কী ঘটবে—“আপনিও জানেন না, আমিও জানি না, এমনকি ট্রাম্পও জানেন না”—এমনই মন্তব্য করেন তিনি।
এই মন্তব্য কোনো রম্য হিসাবেই নয়—বরং আধুনিক নিরাপত্তা জীবনের এক গভীর ব্যথা ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়েছে। গতিতে বাড়ছে প্রযুক্তিগত যুদ্ধ, সাইবার আক্রমণ, স্পেস ও স্যাটেলাইট সংক্রান্ত হুমকি, রেডিওলজি বা বায়োলজি ভিত্তিক হুমকিগুলো। এই চক্রে আমরা ভয় পাচ্ছি না—বরং দ্রুত পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে মিলিয়ে চলতে পারছি কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন। এই লেখায় আমরা এই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করব।
অস্থিরতা ও অস্পষ্টতার যুগ – “আইনিক” নিরাপত্তা চিত্র

Dwivedi বলেছেন, যে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জগুলোর রূপ হবে চক্রাকারে—অস্থিরতা (instability), অনিশ্চিততা (uncertainty), জটিলতা (complexity) ও স্পষ্ট‑অস্পষ্টতা (ambiguity)—এই চারটি একত্রে হবে।
তিনি বলেন: “আপনিও জানেন না, আমিও জানি না কাল কী হবে”—এমনকি ট্রাম্পও হয়তো জানেন না।
শুধু সীমানা বা সশস্ত্র লড়াই নয়, এখন অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে সাইবার আক্রমণ, স্যাটেলাইট ব্যবহারের ঝামেলা, রেডিওলজি/বায়োলজি হুমকি ও তথ্য যুদ্ধ।
ভালো দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবলে, এটি আমাদের সচেতন হওয়ার ডাক—যে শুধু মাত্র অস্ত্র বা সেনা প্রস্তুতিই যথেষ্ট নয়; তথ্য, প্রযুক্তি, সাইবার প্রতিরোধ, দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ—সবকিছুই এখন একভাবে জরুরি।
কিন্তু বিপরীতে ভাবলে, যদি আমরা শুধুই প্রচলিত ভাবনায় থাকি—প্রচলিত সেনা মাত্রা, সীমানা নিয়ন্ত্রণ, তখন আমরা হয়তো পিছিয়ে পড়ব। এটা এমন এক ধরনের চ্যালেঞ্জ যা “আগামীকালের জন্য আজই প্রস্তুত” না হলে দ্রুত আমাদের জন্য ঘন হুমকিতে পরিণত হতে পারে।
সীমা ছাপিয়ে যাওয়া যুদ্ধের পরিধি

Dwivedi‑র ভাষণে একাধিক “নতুন যুদ্ধে” উল্লেখ ছিল—যেমনঃ সাইবার আক্রমণ, স্পেস ওয়ারফেয়ার, স্যাটেলাইটের হামলা, রেডিওলজি/বায়োলজি হুমকি।
তিনি বলছেন, “আমরা শুধু ভূমিতে বা সীমানায় দেখা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হই, কিন্তু এখন যুদ্ধ হয়েছে এমন এক জায়গায় যেখানে ‘মাইন্ডস অন গ্রাউন্ড’ প্রয়োজন।”
উদাহরণস্বরূপ, তথ্য‑যুদ্ধ (information warfare)‑র ক্ষেত্রে: রটনায় ছিল করাচি আক্রমণ হয়েছে—কিন্তু সেটা ধোঁচনা।
এই প্রসঙ্গে আমাদের ভাবার বিষয়গুলো:
- সীমানার লড়াই এখনও আছে, থাকবে। terrorism, সীমান্ত উত্তেজনা।
- কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, নতুন “ডোমেইন” গুলো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে—উদাহরণস্বরূপ, স্পেস, সাইবার স্পেস, স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন, অক্টিফিকেটেড তথ্য রটনা।
- এতে যে বড় পরিবর্তন এসেছে তা হলো: যুদ্ধ শুধু সেনা + অস্ত্রের মেলবন্ধন নয়, তথ্য + প্রযুক্তি + জনসংযোগ হয়ে উঠেছে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
- ফলে, প্রতিরক্ষা কৌশল নতুন করে নির্ধারণ করতে হবে—শুধু অস্ত্র নয়, প্রযুক্তি, তরুণ শক্তি, দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, মিডিয়া/ইনফরমেশন নিয়ন্ত্রণ সহ।
চ্যালেঞ্জ হল—এই ধরনের প্রস্তুতিতে শুধু সেনাবাহিনী নয়, সমাজ, মিডিয়া, তরুণ প্রজন্ম—সবকিছুর সমন্বয় দরকার। আর সেখানে আমরা কি যথেষ্ট এগিয়ে আছি? হয়তো এখনও অনেক পথ বাকি।
শিক্ষার্থী, যুব‑শক্তি এবং ভবিষ্যতের দায়িত্ব

Dwivedi যুব‑শক্তিকেও ডাক দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন—Generation Z হচ্ছে ডিজিটালি সাবলীল, প্রযুক্তিতে পারদর্শী, ইনফরমেশনে যুক্ত, বৈশ্বিকভাবে সংযুক্ত। যদি এই প্রজন্মকে অনুশাসন ও সঠিক গাইডেন্স দেওয়া হয়, তাহলে ভারত কয়েক যুগ আগেই এগিয়ে যেতে পারবে।
আমরা ভাবতে পারি:
- শিক্ষার্থীরা কি শুধুই প্রযুক্তিতে পারদর্শী, নাকি চিন্তা‑ক্ষমতাও বিকাশ করছে?
- তথ্যপ্রবাহে কি তারা দক্ষ—লোকাভবা(fake news) চেনার ক্ষমতা রয়েছে কি না?
- তরুণরা কি শুধুই “ব্যবহারকারী” হিসেবে রয়েছে, নাকি তারা সক্রিয়ভাবে “রক্ষা‑প্রতিবন্ধক” হিসেবে শিখছে?
Dwivedi‑র ভাষ্য অনুপ্রেরণাদায়ক হলেও এখানে একটা চ্যালেঞ্জও রয়েছে—শুধুই বললেই হবে না, বাস্তবতা সেই সঙ্গে থাকতে হবে।
“আমি আপনাদের বলি—আপনাদের শক্তি যদি পাশাপাশি অনুশাসন ও গাইডেন্স পায়, তাহলে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারবে।”
তাহলে প্রশ্ন হচ্ছেঃ আমরা সেই গাইডেন্স ও প্রস্তুতি দিচ্ছি কি না? শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কি তথ্যসচেতনতা বাড়ছে? প্রযুক্তি‑নির্ভর যুবশক্তি কি শুধুই “টুল ব্যবহারকারী” হয়েই থাকবে না—বরং “চিন্তাকারী ও রক্ষাকারী” হিসেবে উঠে আসবে? এখানে আমাদের সমাজ‑স্তরে গভীর চিন্তা দরকার।
উপসংহার
আজ আমরা জানলাম, সুরক্ষা ও যুদ্ধের মানে আজ আগের মতো নেই। Indian Army‑র প্রণেতা Upendra Dwivedi‑র বক্তব্য স্পষ্ট করিয়ে দিয়েছে: আগামীকাল কী ঘটবে—এটা আগাম জানবার উপায় নেই। একদিকে সীমান্ত, সশস্ত্র সংঘর্ষ, সন্ত্রাস—এইসব চর্চিত হুমকিগুলো রয়েছে। অন্যদিকে প্রযুক্তিগত, তথ্যভিত্তিক, সাইবার ও স্পেস‑অঞ্চলে আমরা নতুন ভাবে উত্তেজনায় রয়েছে।
এই চিত্রে তিনটি বিষয় বিশেষভাবে মাথায় রাখতে হবে:
- পূর্ণ প্রস্তুতি: শুধু অস্ত্র বা সেনাবাহিনী নয়—তথ্য, প্রযুক্তি, যুক্তি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ‑ক্ষমতা আরও গুরুত্বপূর্ণ।
- যুব‑প্রজন্মের অংশগ্রহণ: Generation Z–কে শুধু প্রযুক্তিতে পারদর্শী নয়, দায়িত্ববোধসম্পন্ন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
- সচেতনতা ও সমন্বয়: মিডিয়া, সমাজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান—সবাই মিলিয়ে কাজ করতে হবে, যাতে তথ্য‑হস্তক্ষেপ, রটনা, ভুল ফ্লোকে আমরা প্রতিরোধ করতে পারি।
👉 আপনার দায়িত্ব এখানে শেষ হয় না—আপনি এই কথাগুলোকে চিন্তা করবেন, আপনার পাঠক‑দর্শক অথবা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভাগ করবেন। মন্তব্যে জানিয়ে দিন—আপনি কি মনে করেন আমাদের শিক্ষা‑প্রতিষ্ঠান, মিডিয়া ও প্রযুক্তি‑খাত এই চ্যালেঞ্জের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে?






