মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে লক্ষ্য করে কড়া ভাষা ব্যবহার করেছেন। এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, বাণিজ্য ও শুল্ক সংক্রান্ত ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁকে ‘রাজকীয় অবজ্ঞা’ দেখিয়েছেন। এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার ঝড় উঠেছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে।
শুল্ক যুদ্ধ ও ট্রাম্পের মন্তব্য
ট্রাম্পের দাবি, ভারতের পক্ষ থেকে আরোপিত বাড়তি আমদানি শুল্ক আমেরিকান ব্যবসায়ীদের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি মোদিকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “Stop Or…”, অর্থাৎ অবিলম্বে এই শুল্কনীতি বন্ধ না হলে কড়া পদক্ষেপ নেবে যুক্তরাষ্ট্র।
এই ঘটনাটি কেবল দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককেই প্রভাবিত করছে না, বরং রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও নতুন উত্তেজনা তৈরি করছে। অতীতে মোদি ও ট্রাম্পের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ বলেই ধরা হতো। তবে সাম্প্রতিক ইস্যুটি সেই সম্পর্কের ভাঙন নির্দেশ করছে।

‘রাজকীয় অবজ্ঞা’ অভিযোগের পেছনের প্রেক্ষাপট
ট্রাম্প দাবি করেন, তাঁর প্রেসিডেন্সির সময় তিনি ভারতের প্রতি বাণিজ্যিক ছাড় দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদি সেই প্রস্তাবকে একাধিকবার উপেক্ষা করেন। ট্রাম্প এটিকে ব্যক্তিগতভাবে ‘রাজকীয় অবজ্ঞা’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।
তবে ভারতীয় কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, ভারতের শুল্কনীতি সম্পূর্ণভাবে “জাতীয় স্বার্থ ও স্বনির্ভরতার কৌশল” অনুযায়ী গৃহীত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত তার অভ্যন্তরীণ শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য শুল্ক আরোপ করেছে, যা আন্তর্জাতিক নীতির সঙ্গেই সামঞ্জস্যপূর্ণ।
বিশ্ব রাজনীতিতে প্রতিক্রিয়া
বিশ্ব রাজনীতি পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই নতুন আক্রমণ আসন্ন মার্কিন নির্বাচনের প্রেক্ষিতে একটি কৌশল হতে পারে। তিনি ভোটারদের বোঝাতে চাইছেন যে, তাঁর আমলেই আমেরিকা কঠোর বাণিজ্য নীতি গ্রহণ করেছিল।
ভারতের দিক থেকে এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে কূটনৈতিক মহলের ধারণা, নয়া দিল্লি বিষয়টিকে শান্ত কূটনৈতিক ভাষায় মোকাবিলা করবে।

Image Alt: শুল্ক নীতি নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য
উপসংহার
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যে স্পষ্ট যে, ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও টানাপোড়েনের মুখে পড়তে পারে। শুল্ক যুদ্ধ শুধু অর্থনীতি নয়, দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে—ভারত কি তার স্বনির্ভর নীতি বজায় রেখে চলবে, নাকি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার পথে যাবে?