সম্প্রতি প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার উচ্চপর্যায়ের এক আইনপ্রণেতা জানিয়েছেন, রাশিয়ার হাতে এমন পর্যাপ্ত পারমাণবিক সাবমেরিন রয়েছে যা একসাথে দুটো দেশকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম। এই মন্তব্য নতুন করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
ট্রাম্পের বক্তব্য ও তার জবাবে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি
ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন যা প্রতিপক্ষ রাষ্ট্রগুলোর জন্য উত্তেজনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তিনি বলেন, “আমাদের শত্রুরা যদি কিছু করে, তবে তাদের ফল ভোগ করতে হবে, এবং তা অত্যন্ত গুরুতর হবে।” এই বিবৃতির পরেই রাশিয়ার এক সিনিয়র আইনপ্রণেতা পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “আমাদের হাতে এমন যথেষ্ট পারমাণবিক সাবমেরিন রয়েছে যা দুইটি দেশকে একসাথে দমন করতে পারে।“
এই বক্তব্য সরাসরি কোনো দেশের নাম না করলেও, বিশ্ব রাজনীতির চলমান প্রেক্ষাপটে এই মন্তব্যকে আমেরিকা এবং তার মিত্রদের উদ্দেশ্য করেই দেওয়া হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
পারমাণবিক সাবমেরিন: আধুনিক যুদ্ধের গোপন হাতিয়ার
রাশিয়ার এই “হুঁশিয়ারি” শুধুই মুখের কথা নয়। বর্তমানে রাশিয়ার হাতে আছে Typhoon-class, Borei-class এবং Oscar-class-এর মতো আধুনিক পারমাণবিক সাবমেরিন। এসব সাবমেরিন পানির নিচে দীর্ঘ সময় লুকিয়ে থেকে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
সাবমেরিনগুলোর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য:
- একাধিক ব্যালিস্টিক মিসাইল বহন ক্ষমতা
- শব্দের চেয়ে দ্রুতগতির টর্পেডো
- কয়েক মাস পানির নিচে থাকার সক্ষমতা
- রাডারে ধরা না পড়ার জন্য অত্যাধুনিক স্টেলথ প্রযুক্তি

এই অস্ত্রশস্ত্রের উপস্থিতি রাশিয়াকে শুধু সামরিকভাবেই নয়, কূটনৈতিকভাবেও শক্তিশালী করে তুলেছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও বিশেষজ্ঞ মত
বিশ্বের অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এই ধরনের মন্তব্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রভাব ফেলতেই এমন বার্তা দেওয়া হচ্ছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, এটি রাশিয়ার পক্ষ থেকে এক প্রকার “সাইকোলজিকাল ওয়ারফেয়ার” বা মানসিক চাপ সৃষ্টির কৌশল।
আরও কয়েকটি প্রতিক্রিয়া:
- নেটো (NATO): সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে।
- চীন: এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া না দিলেও, পরিস্থিতি নজরে রাখছে।
- ইউক্রেন: রাশিয়ার এমন মন্তব্যকে “সরাসরি হুমকি” হিসেবে দেখছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের পারমাণবিক রণনীতির উল্লেখ বিশ্বে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক শান্তি আলোচনা ব্যাহত করতে পারে।
উপসংহার: অশান্তির ইঙ্গিত, না কি রাজনৈতিক কৌশল?
রাশিয়ান আইনপ্রণেতার এই হুঁশিয়ারি শুধুই সামরিক শক্তি প্রদর্শন নয়, বরং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রাশিয়ার স্ট্যান্ড পরিষ্কারভাবে তুলে ধরছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের জবাবে এমন হুঁশিয়ারি দেওয়া আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে।
বিশ্ববাসী এখন অপেক্ষায় — এই রণনীতির উত্তাপ কতদূর গড়ায়, এবং বিশ্বনেতারা কীভাবে এর জবাব দেন।
📢 আপনার মতামত দিন!
এই প্রতিবেদন সম্পর্কে আপনার মতামত নিচে কমেন্ট করুন বা আমাদের ফেসবুক পেজে শেয়ার করুন। আন্তর্জাতিক রাজনীতির এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে আপনিও হোন সজাগ ও সচেতন।