টানা কয়েক সপ্তাহের বৃষ্টির পর অবশেষে বর্ষা বিদায়ের সূচনা হতে চলেছে আজ থেকেই। আবহাওয়া দফতরের (IMD) সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু ধীরে ধীরে পূর্ব ভারতের দিক থেকে সরে যাচ্ছে। এর ফলে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে শুকনো ও পরিষ্কার আবহাওয়া বিরাজ করবে আগামী কয়েকদিন।
বর্ষা বিদায়ের আনুষ্ঠানিক সূচনা আজ থেকেই
আবহাওয়া দফতরের (IMD) তরফে জানানো হয়েছে যে, এবছরের বর্ষা সময়ের তুলনায় কিছুটা বিলম্বে বিদায় নিচ্ছে। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ ও অক্টোবরের প্রথম দিকে শহরে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।
বৃষ্টির কারণে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলজট ও যানজটের সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তবে এখন থেকে ধীরে ধীরে উত্তর-পশ্চিমের শুকনো বাতাস প্রবেশ করতে শুরু করবে, যা আর্দ্রতা কমিয়ে এনে মনোরম আবহাওয়া তৈরি করবে।

🌤️ শুকনো আবহাওয়ায় স্বস্তি নাগরিকদের মধ্যে
টানা ভেজা দিনগুলির পর এবার শহরবাসীর মুখে স্বস্তির হাসি। আগামী কয়েকদিনে কলকাতায় পরিষ্কার আকাশ ও মনোরম আবহাওয়া বজায় থাকবে বলে জানিয়েছে IMD। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পাবে এবং সকালে হালকা ঠান্ডা অনুভূত হবে।
এই পরিবর্তনের ফলে দুর্গাপুজো প্রস্তুতি, বাজারচলাচল ও রাস্তার কাজ আরও গতিময় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দীর্ঘদিনের বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলি সংস্কারের কাজও দ্রুত শুরু করবে পুরসভা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হালকা বিচ্ছিন্ন বৃষ্টিপাত হতে পারে, তবে সামগ্রিকভাবে শহর থাকবে শুষ্ক ও স্বস্তিদায়ক। এটি মূলত পর-মৌসুমের (Post-Monsoon) পর্যায়ে প্রবেশের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

🌾 কৃষিক্ষেত্রে প্রভাব ও আশার বার্তা
বর্ষা বিদায় শহরের জন্য স্বস্তি বয়ে আনলেও, কৃষিক্ষেত্রে এর প্রভাব বহুমুখী। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেরিতে বর্ষা বিদায়ের কারণে মাটির আর্দ্রতা ও ভূগর্ভস্থ জলস্তর পর্যাপ্ত পরিমাণে পূরণ হয়েছে, যা রবি ফসলের চাষে সহায়ক হবে।
তবে কিছু অঞ্চলে অতিরিক্ত আর্দ্রতা থাকায় বিলম্বিত ধান কাটার সময় সমস্যা দেখা দিতে পারে। কৃষি দফতর ইতিমধ্যেই সেচ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে যাতে কৃষকরা সঠিক সময়ে জল সরবরাহ পেতে পারেন।

🎉 উৎসবের আগে আবহাওয়ার এই পরিবর্তনে উচ্ছ্বাস
বর্ষা বিদায়ের এই সময়টি বাংলার সবচেয়ে বড় উৎসব — দুর্গাপূজোর আগমনী ঘণ্টা বেজে ওঠার সময়ের সঙ্গে মিলে গেছে। এখনকার পরিষ্কার আকাশ, হালকা বাতাস ও ঠান্ডা সকাল শহরজুড়ে উৎসবের আবহ তৈরি করছে।
প্যান্ডেল সাজানো, প্রতিমা গড়া ও বাজার ঘোরার আনন্দে শহর জেগে উঠছে নতুন প্রাণে। এই শুকনো আবহাওয়া পর্যটন শিল্পকেও উজ্জীবিত করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দিঘা, পুরী, দার্জিলিং-এর মতো গন্তব্যে পর্যটকদের ভিড় বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

📰 উপসংহার: বৃষ্টির বিদায়ে নতুন সূচনা
অবশেষে শহরবাসী পেতে চলেছে একটুখানি রোদ ও স্বস্তির সকাল। বর্ষা বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হচ্ছে শরতের মনোরম অধ্যায়। নাগরিকদের জন্য এটি শুধু আবহাওয়ার পরিবর্তন নয়, এক নতুন ঋতুর আগমন — আলো, আনন্দ ও উৎসবের ঋতু।






