২০১৩ সালের ১৪ আগস্ট — পশ্চিমবঙ্গের সামাজিক ইতিহাসে এক মাইলফলক দিন। সেই দিনেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সূচনা করেছিলেন ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের। উদ্দেশ্য ছিল পরিষ্কার — আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা কন্যাদের উচ্চশিক্ষা ও স্বনির্ভরতার পথ সুগম করা। আজ, ১২ বছর পর, এই প্রকল্প কেবল বাংলার নয়, আন্তর্জাতিক পরিসরেও নারী ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।
এক যুগ পেরিয়ে গর্বের খতিয়ান
আজ (১৪ আগস্ট ২০২৫) মুখ্যমন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন—
আজ কন্যাশ্রী দিবস। আমাদের সকলের গর্বের কন্যাশ্রী প্রকল্প আজ ১২ বছরে পা দিল। সারা বিশ্ব জুড়ে, সারা দেশ জুড়ে, সারা বাংলা জুড়ে সকল কন্যাশ্রীদের জানাই অনেক অনেক অভিনন্দন।
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) August 14, 2025
সমাজে মেয়েদের ক্ষমতায়ণের ক্ষেত্রে এতো অল্প সময়ে এতো বড় প্রভাব অন্য কোন সরকারি প্রকল্পের আছে বলে আমার…
“আমাদের সকলের গর্বের কন্যাশ্রী প্রকল্প আজ ১২ বছরে পা দিল। সারা বিশ্ব, সারা দেশ এবং সারা বাংলার সব কন্যাশ্রীদের জানাই অভিনন্দন।”
তিনি উল্লেখ করেন, এত কম সময়ে নারী ক্ষমতায়নে এত বড় প্রভাব আর কোনও সরকারি প্রকল্প ফেলতে পারেনি। এর প্রমাণ মিলেছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতেও— ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক মঞ্চে ৬২টি দেশের ৫৫২টি প্রকল্পের মধ্যে প্রথম স্থান পেয়ে কন্যাশ্রী জিতেছে United Nations Public Service Award।
সংখ্যার গল্প
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, এতদিনে ৯৩ লক্ষেরও বেশি ছাত্রী এই প্রকল্পের আওতায় এসেছে। তাঁদের হাতে পৌঁছেছে প্রায় ₹১৭,৫০০ কোটি টাকা— যা সরাসরি তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে।
মেয়েদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা—
“জীবনে বড় হও, দেশের ও রাজ্যের মুখ উজ্জ্বল করো। তোমরাই একদিন বিশ্ববাংলা গড়বে, বিশ্বে সম্মানের মুকুট মাথায় পরবে।”
অভিষেকের শুভেচ্ছা পোস্ট
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও ফেসবুকে ‘কন্যাশ্রী দিবস’-এর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তাঁর পোস্টারে লেখা— “আমি কন্যাশ্রী, আমি ভবিষ্যতের অনন্যা”। ইউনেস্কো পুরস্কারের উল্লেখও ছিল সেই পোস্টে।
কন্যাশ্রী প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ও সুবিধা
- উদ্দেশ্য: আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা মেয়েদের উচ্চশিক্ষা ও স্বনির্ভরতার সুযোগ তৈরি।
- সুবিধা: নির্দিষ্ট বয়সে পৌঁছনো কন্যাদের জন্য এককালীন ₹২৫,০০০ টাকা।
- পদ্ধতি: স্কুল বা কলেজ থেকে সহজেই ফর্ম সংগ্রহ করে নাম নথিভুক্ত করা যায়, অর্থ সরাসরি মেয়েদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে যায়।
১২ বছরে এই প্রকল্প কেবল মেয়েদের অর্থনৈতিক সুরক্ষা দেয়নি, বরং তাঁদের আত্মবিশ্বাস ও সামাজিক অবস্থানেও বদল এনেছে। আন্তর্জাতিক পুরস্কার জয় কন্যাশ্রীকে বিশ্বমঞ্চে পরিচিত করেছে বাংলার ‘নারীশক্তির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ হিসেবে।