বঙ্গোপসাগরের শক্তিমান ঘূর্ণিঝড় মন্থা অন্ধ্র উপকূলে ল্যান্ডফল ঘটানোর পর ধীরে ধীরে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের দিকে তার প্রভাব বিস্তার করেছে। অন্ধ্রপ্রদেশে কিছু এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত আর ঝোড়ো হাওয়া হলেও, বহু মানুষ পুনর্বাসন কেন্দ্রে সরিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়. যদিও আশঙ্কার তুলনায় ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে, সক্রিয়ভাবে চলছে রেল—বিমান পরিষেবার পুনর্বহাল আর বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার কাজ.
দক্ষিণবঙ্গে সতর্ক সংকেত
দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়, বিশেষত দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা—আবহাওয়া অধিদপ্তর ‘ইয়েলো’ সতর্কতা ঘোষণা করেছে. কৃষকদের পরামর্শ—ফসল মাঠ থেকে তুলে নিয়ে নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণ করুন। নিম্নাঞ্চলে জলজটে বিপদের আশঙ্কা থাকায় স্থানীয় প্রশাসন প্রস্তুত। মৎস্যজীবীদের প্রবল সতর্কতা—তিনদিন সমুদ্রে যাওয়া নিষিদ্ধ.

উত্তরবঙ্গে পরিস্থিতি
উত্তরবঙ্গে পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে অনেকটাই স্বস্তির। দার্জিলিং, কালিম্পং অঞ্চলে হালকা বৃষ্টি ছাড়া বড় ধরনের ঝুঁকি ছিল না। তবে পরিবেশবিদ ও কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, পাহাড়ি অঞ্চলে অতিবৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলে ভূমিধস ও ফসলের ক্ষতি হতে পারে.

ঘূর্ণিঝড়ের দুর্বলতা ও স্বস্তি
‘উইন্ড শেয়ার’-এর কারণে মন্থার শক্তি ল্যান্ডফল মুহূর্তে অনেকটা কমে আসে. ফলে আশঙ্কামুক্ত হয় উপকূলবর্তী এলাকাগুলো। বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ—অস্থায়ী সমস্যার মুখে পড়লেও দ্রুত সারানো হয়েছে। প্রশাসনের সক্রিয় উদ্যোগের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো গেছে, সাধারণ মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন.
প্রস্তুতি ও জনসচেতনতা
আবহাওয়া দপ্তরের সর্তকতা অনুযায়ী, জলজট, ফসলের ক্ষতি ও ট্রাফিক জ্যামের আশঙ্কা থাকায় জনগণকে নিরাপদে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে সতর্কতামূলক প্রচার, দুর্যোগ মুহূর্তে প্রশাসনের তরফে মাল্টিমিডিয়া আপডেট ও রিয়েল-টাইম মানিটরিং সিস্টেমে নজরদারি.
উপসংহার
ঝড়ের কারণে আতঙ্ক থাকলেও মন্থার শেষমেশ দুর্বল হয়ে পড়ায় স্বস্তি ফিরেছে সুদূর উপকূল থেকে কলকাতা পর্যন্ত। এই অভিজ্ঞতা দেখিয়ে দিল, সফল প্রস্তুতি ও জনসচেতনতাই প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পারে। আপনিও সচেতন থাকুন—নিজেকে এবং আশেপাশের সবাইকে নিরাপদে রাখুন।






