Call 6291193957 For Advertisement

বেনারসি শাড়ির ইতিহাস: অপূর্ব নকশা আর রাজকীয় ঐতিহ্যের গল্প

মুঘল আমল থেকে বর্তমান পর্যন্ত বেনারসি শাড়ির রাজকীয় ইতিহাস, নকশার বৈচিত্র্য ও কারিগরদের শিল্পকৌশল নিয়ে এক অনবদ্য গল্প। GI ট্যাগ পাওয়া এই শাড়ি আজও বাঙালির বিয়ের প্রথম পছন্দ।

Table of Contents

Share Our Blog Now :
Facebook
WhatsApp
বেনারসি শাড়ির ইতিহাস: অপূর্ব নকশা আর রাজকীয় ঐতিহ্যের গল্প

বাংলার বুকে, বিশেষ করে বিয়ের সাজে বেনারসি শাড়ি এক অবিচ্ছেদ্য নাম। কিন্তু জানেন কি এই বেনারসি শাড়ির শিকড় কতটা গভীরে বিস্তৃত? এ শুধু কাপড় নয়—এ এক ইতিহাস, সংস্কৃতি আর কারিগরদের প্রজন্মান্তরের গল্প।

বেনারসি শাড়ির ইতিহাস: অপূর্ব নকশা আর রাজকীয় ঐতিহ্যের গল্প

উৎপত্তি: মুঘল দরবার থেকে গঙ্গার তীর

বেনারসি শাড়ির সূচনা মূলত ১৪শ থেকে ১৫শ শতকে, মুঘল আমলে। মুঘল সম্রাটরা ভারতের শিল্প ও সংস্কৃতিতে যে বিশাল প্রভাব ফেলেছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় পারস্য থেকে আগত বুননশিল্পী ও কারিগররা ভারতীয় তাঁতশিল্পে এক নতুন যুগের সূচনা করেন। তাঁরা বেনারসে (বর্তমান বারাণসী) বসতি স্থাপন করে সূক্ষ্ম রেশম বুননের কাজ শুরু করেন।

এই যুগে বেনারসি শাড়িতে মুঘল স্থাপত্য, ফুল, পাতা, বেলবুটি, এবং জটিল জ্যামিতিক নকশার প্রভাব স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

বেনারসি শাড়ির ইতিহাস: অপূর্ব নকশা আর রাজকীয় ঐতিহ্যের গল্প

রেশম ও জরি: বেনারসির প্রাণ

বেনারসি শাড়ি সাধারণত কাঁচা রেশম দিয়ে তৈরি হয়, যার ওপর রুপো বা সোনালি জরি দিয়ে নকশা আঁকা হয়। একসময় এই জরি ছিল আসল সোনা ও রুপো দিয়ে তৈরি। আজকের দিনে তা আর্থিক কারণে অলংকারের মত মুল্যবান না হলেও, তার কারিগরি সৌন্দর্য আজও অপরিবর্তিত।

বেনারসি শাড়ির ইতিহাস: অপূর্ব নকশা আর রাজকীয় ঐতিহ্যের গল্প

কারিগরদের শিল্পকৌশল

একটি খাঁটি বেনারসি শাড়ি তৈরি হতে পারে ১৫ দিন থেকে শুরু করে ৬ মাস পর্যন্ত, নির্ভর করে ডিজাইন ও কাজের জটিলতার উপর। সাধারণত একটি শাড়ি তৈরি করতে ২ থেকে ৩ জন অভিজ্ঞ কারিগর প্রয়োজন হয়, যাঁরা প্যাটার্ন তৈরি, তাঁতে রেশম বসানো এবং জরি দিয়ে অলংকরণ করার কাজ ভাগ করে নেন।

বেনারসি শাড়ির ইতিহাস: অপূর্ব নকশা আর রাজকীয় ঐতিহ্যের গল্প

রাজকীয় গৌরব

একসময় বেনারসি শাড়ি শুধুমাত্র রাজপরিবার ও অভিজাতদের জন্য তৈরি হতো। নবাব, সম্রাট এবং জমিদার পরিবারের মহিলারা বেনারসি শাড়িকে তাদের গর্ব ও ঐতিহ্য হিসেবে বেছে নিতেন। আজও হিন্দু বিবাহের সবচেয়ে পছন্দের বিয়ের শাড়ি হিসেবে বেনারসির কদর অটুট।

প্রকারভেদ

বেনারসি শাড়িরও নানা রকম ভাগ রয়েছে, যেমন:

কতান বেনারসি: খাঁটি রেশম দিয়ে তৈরি।

শতরঞ্জি বা জামদানি বেনারসি: সূক্ষ্ম জটিল ডিজাইন, অনেকটা ঢাকাই জামদানির মতো।

তনচই বেনারসি: উজ্জ্বল ও মসৃণ বুনন, মোটা ডিজাইনসহ।

অঙ্গরাখা বেনারসি: বেলবুটির সারা শরীর জুড়ে কাজ।

বেনারসি শাড়ির ইতিহাস: অপূর্ব নকশা আর রাজকীয় ঐতিহ্যের গল্প

ভৌগলিক স্বীকৃতি (GI Tag)

২০০৯ সালে বেনারসি শাড়ি পেয়েছে GI (Geographical Indication) ট্যাগ, যার অর্থ এই পণ্যটি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট অঞ্চলে উৎপাদিত হয় এবং তা ওই অঞ্চলের ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িত।

বেনারসি শাড়ি শুধু একটি পোশাক নয়—এ এক জীবন্ত ইতিহাস, যাকে গর্বের সঙ্গে পরিধান করেন নারীরা। প্রতিটি শাড়ির প্রতিটি নকশা যেন একেকটি শিল্পকর্ম, যার ভিতর রয়েছে শত শত বছরের ঐতিহ্য, কাহিনি ও প্রেম।

“যে বেনারসি পরেন, তিনি ইতিহাস বয়ন করেন।”

RELATED Articles :
বেনারসি শাড়ির ইতিহাস: অপূর্ব নকশা আর রাজকীয় ঐতিহ্যের গল্প
সম্পাদকীয়
বেনারসি শাড়ির ইতিহাস: অপূর্ব নকশা আর রাজকীয় ঐতিহ্যের গল্প

মুঘল আমল থেকে বর্তমান পর্যন্ত বেনারসি শাড়ির রাজকীয় ইতিহাস, নকশার বৈচিত্র্য ও কারিগরদের শিল্পকৌশল নিয়ে এক অনবদ্য গল্প। GI ট্যাগ পাওয়া এই শাড়ি আজও বাঙালির বিয়ের প্রথম পছন্দ।

Read More »
error: Content is protected !!