প্রযোজনা থেকে প্রচার—সব ক্ষেত্রেই ছিল গ্ল্যামার ও উচ্চ প্রত্যাশা। “Baahubali: The Epic” ছিল মূলত S. S. Rajamouli-র দৌড়ঝাঁপের দুই অধ্যায় — Baahubali: The Beginning ও Baahubali 2: The Conclusion — এই দুই ব্লকবাস্টারের একত্র রিমাস্টার্ড সংস্করণ।
অক্টোবর ৩১ তারিখে মুক্তির পর প্রথম চার দিন দুর্দান্ত সাড়া পেয়েছিল, কিন্তু পাঁচম দিন অর্থাৎ মঙ্গলবারে ছবির বক্স-অফিসে দেখা গেছে তীব্র পতন। চলুন দেখা যাক পাঁচ দিনের আয়, দর্শক প্রতিক্রিয়া ও প্রতিযোগী ছবির সঙ্গে তুলনামূলক বিশ্লেষণ।
ভালো শুরু, কিন্তু মঙ্গলবারে বড় ধাক্কা

মুক্তির পর “Baahubali: The Epic” প্রথম সপ্তাহান্তে ঝড় তুলেছিল।
- প্রথম দিন (শুক্রবার): আয় প্রায় ₹ 9.65 কোটি
- দ্বিতীয় দিন (শনিবার): ₹ 7.25 কোটি
- তৃতীয় দিন (রবিবার): ₹ 6.30 কোটি
তবে সোমবার থেকেই কমে আসতে শুরু করে দর্শক-সংখ্যা — - চতুর্থ দিন (সোমবার): আয় ₹ 1.75 কোটি
- পঞ্চম দিন (মঙ্গলবার): মাত্র ₹ 1.50 কোটি
এই তথ্য থেকেই বোঝা যায়, সপ্তাহান্তে দর্শক আগ্রহ ছিল প্রবল, কিন্তু কর্মদিবসের আগমনেই তা দ্রুত হ্রাস পেয়েছে।
কেন এই বড় পতন?
- রিমাস্টার ক্লান্তি: দর্শকদের বড় অংশ আগেই মূল সিরিজ দেখেছেন, ফলে নতুনত্বের অভাব ছিল।
- প্রচার সীমাবদ্ধতা: প্রথম দুই দিনের উত্তেজনা বজায় রাখতে পারেনি।
- কর্মদিবস প্রভাব: অফিস-স্কুলের ব্যস্ততায় থিয়েটারে ভিড় কমেছে।
- রিমাস্টার সিনেমার মনোভাব: দর্শক মনে “এটা তো আগেই দেখেছি” ভাব, যা টিকিট বিক্রিতে প্রভাব ফেলেছে।
প্রতিযোগী ছবির সঙ্গে তুলনা — ‘The Taj Story’ ও ‘Ek Deewane Ki Deewaniyat’

মঙ্গলবারে Baahubali: The Epic-এর আয় এসে দাঁড়ায় এমন এক স্তরে, যেখানে এটি ‘The Taj Story’ এবং ‘Ek Deewane Ki Deewaniyat’-এর সমান পারফরম্যান্স দেখিয়েছে।
এই দুই ছবিকে সাধারণভাবে মিড-রেঞ্জ হিন্দি ড্রামা ফিল্ম হিসেবে ধরা হয়। তাই Prabhas-এর মতো তারকা ও Rajamouli-র মতো ব্র্যান্ড যুক্ত একটি ছবির এমন তুলনামূলক ফলাফল কিছুটা অবাক করেছে সিনেমা-বিশ্লেষকদের।
এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় — কেবল ব্র্যান্ড-নাম বা নস্টালজিয়া-ফ্যাক্টর দিয়ে দর্শক ধরে রাখা যায় না। সময়ের সঙ্গে দর্শকের রুচি বদলাচ্ছে, এবং তারা নতুন গল্প ও ভিজ্যুয়াল ইনোভেশন চায়।
দর্শক-অকুপেন্সি ও ভাষাগত পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ

Baahubali: The Epic-এর ওকুপেন্সি রেট (শো ভর্তি হার) মঙ্গলবার ছিল তুলনামূলকভাবে কম।
- তেলুগু ভাষায়: প্রায় 14 %–15 %
- হিন্দি ভাষায়: প্রায় 25 % (বিশেষ করে সন্ধ্যা শোতে কিছুটা উন্নতি)
- দক্ষিণ ভারতের কিছু শহরে তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল, তবে উত্তর ভারতে পতন বেশি।
এছাড়া, কলকাতা-সহ পূর্ব ভারতের অঞ্চলে ছবিটির শো সংখ্যা সীমিত ছিল। স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটররা জানিয়েছেন, প্রথম সপ্তাহের পর দ্বিতীয় সপ্তাহে রিমাস্টার ছবির স্ক্রিন সংখ্যা আরও কমানো হতে পারে।
দর্শক প্রতিক্রিয়া ও সমালোচকদের মত
অনেক দর্শক ছবিটিকে “নস্টালজিক কিন্তু পুনরাবৃত্তিমূলক” বলেছেন। বড় স্ক্রিনে পুনরায় দেখা ভালো লাগলেও, নতুন কিছু না থাকায় অনেকে OTT রিলিজের জন্য অপেক্ষা করছেন।
সমালোচকদের মতে, Rajamouli-র মেধা ও Prabhas-এর তারকাখ্যাতি এখনও দর্শক টানে, কিন্তু রিমাস্টার বা রি-রিলিজ সংস্করণের ক্ষেত্রে সেই প্রভাব অনেকাংশে কমে যাচ্ছে।
“Baahubali: The Epic” প্রমাণ করেছে যে, শুধু নামের জোরে বা পুরনো গৌরব দিয়ে বক্স-অফিস জয় করা সহজ নয়।
পাঁচ দিনের সারসংক্ষেপ:
- মোট আয়: প্রায় ₹ 26–27 কোটি (ভারতীয় নেট)
- সপ্তাহান্তে দুর্দান্ত সাড়া,
- কর্মদিবসে প্রবল পতন,
- প্রতিযোগী ছবির সমান স্তরে পৌঁছনো — যা সতর্ক সংকেত।
এখন দেখার বিষয় — দ্বিতীয় সপ্তাহে ছবিটি কি পুনরায় গতি পায়, নাকি রিমাস্টার বাজারে আরও এক “ওয়ান-টাইম-ভিউ” উদাহরণ হয়ে থাকে।






